২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

নওগাঁর মান্দায় ভূয়া দলিল বের করে অন্যের সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ! মাদারল‍্যান্ড নিউজ

মাহবুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় ভূয়া দলিল বের করে অন্যের সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগকারী মৈনম ইউ’পির দূর্গাপুর গ্রামের মৃত আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেনের পুত্র আলহাজ্ব মজিবর রহমান জানান, কয়েক বছর পূর্বে আমার ছেলে এবং জামাই যৌথভাবে গনেশপুর মৌজায় কিছু সম্পত্তি ক্রয় করে।

পরবর্তীতে ক্রয়সূতে ওইসব জমির মালিক হবার পর তাদের নিজনামে জমিগুলো নামজারিও করিয়ে নেয়।

এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে নিজের প্রয়োজনে জমিগুলো ওই এলাকার স্থানীয় সৈয়দ কবিরাজ ও পিন্টু অরফে কিনার কাছে প্রায় ১৪ শতক জমি হস্তান্তর করার উদ্দেশ্যে ছেলে এবং জামাইয়ের পক্ষে কিছু টাকা গ্রহণপূর্বক বায়নানামায় চুক্তিবদ্ধ হন।

খসড়া বায়নানামাসূত্রে ওইসকল ক্রেতারা তাদের ইচ্ছেমত জমি রেজিস্ট্রি করার পূর্বেই জমিতে থাকা গাছগুলো কেটে নেয়।

পরবর্তীতে ওই জমির বায়নাকারীদের উপেক্ষা করে ওই গ্রামেরই বিরাজের ছেলে বেলাল একটি ভূয়া দলিল বের করে বিবাদমান ৭ শতক জমি দখলে নেয়।

এতে ভুক্তভোগী মজিবর রহমান আইনের আশ্রয় নিয়ে মান্দা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এনিয়ে মান্দা থানায় উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে একাধিকবার মিটিং করা হয়েছে।

মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে, একই নাম্বারের এবং একই সালের দলিল; আবার জমির দাতা-গ্রহিতাও আলাদা। মৌজাও ভিন্ন-ভিন্ন, জমির পরিমানও এক না! আসলে বিষয়টা কি?

উভয় পক্ষের মাঝে এমন দ্বিধাদ্বন্দ দেখাদিলে অভিযোগের তদন্তকারী এস আই রফিক উভয় পক্ষকে তাদের দলিলের সার্টিফাই দলিল তোলার পরামর্শ দেন।

সেমর্মে উভয় পক্ষ তাদের নিজ নিজ দায়িত্বে সে দলিলটি সংগ্রহ করে। ওই বিবাদমান জমির সার্টিফাই দলিল তুলতে গিয়ে দেখা যায় যে, ওই জমিটি মুলত গনেশপুর মৌজার না; ওইটা আসলে ভরাট্ট শীবনগর মৌজার জমি।

আর বেলাল যে দলিলমুলে জমিটি দাবি করতিছে নওগাঁ সাব-রেজিষ্টারের অফিসে তার কোনো ভলিয়ম বইয়ে কোনো রকম তথ্য নেই।

সুতরাং দলিলটি ভূয়া হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে। কেনোনা,বেলালের দাবিকৃত জমির সার্টিফাই দলিলের কোনো অস্তিত্ব নেই। না আছে কোনো মূল দলিল;আর না আছে কোনো অফিসিয়াল ডকুমেন্ট।

ভূয়া দলিলের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিবাদমান জমি জবরদখলকারী প্রতিপক্ষ রিয়াজ উদ্দিন শেখের দলিলমুলে গনেশপুর কারিকর পাড়ার বিরাজের ছেলে বেলাল বলেন যে জমিটির দলিল আমাদেরটাই সঠিক। আর তাদেরটাই ভুয়া।

এই ভূয়া আর সঠিক দুপক্ষের দলিলদুটো যাচাই-বাছাইয়ে উভয়পক্ষের লোকজনকে নওগাঁ সাব-রেজিষ্টারের অফিসে গিয়ে সার্চ করে সঠিকতা নির্ণয় করে আসার জন্য বলেন এস আই রফিক।

সে অনুযায়ী নওগাঁ সাব-রেজিষ্টারের অফিসে গিয়ে আছিরন বেওয়ার কাছ থেকে রিয়াজ উদ্দিনের দলিলের কোনো ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি বলে জানান ভুক্তভোগী পক্ষের মজিবর রহমান।

ভুয়া দলিলে অন্যায় ভাবে জমি জবরদখলকারীদের থেকে পরিত্রাণ পেতে চান মজিবর রহমান। তিনি বড় বেকায়দায় আছেন। এর একটা দ্রুত সঠিক সমাধান হওয়া দরকার। জমি কিনে যেমন এক বিপদে পরেছেন মজিবর রহমানের ছেলে এবং জামাই। তারা দুজনেই সরকারী চাকুরীজীবী হওয়ায় যতোসব বিড়াম্বনা।

এব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম হাবিবুল হাসান বলেন, জমির দলিল আসলে কোনটা ভূয়া অথবা জাল আর কোনটা সঠিক এটা বলার এখতিয়ার আমাদের নেই। এটি নির্ণয় করবেন মহামান্য আদালত। সার্টিফাই দলিল দেখে কিছু বলা যাবে না। তবে মূল দলিল হলে কিছুটা অনুমান করে বলা সম্ভব যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল। এরপর হয়তো একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। আগে দেখতে হবে, না দেখে কিছু বলা যাবেনা। অযথা মনগড়া সিদ্ধান্ত দিয়ে আমি কাউকেও বিব্রত করতে চাই না। তবে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে আইন অনুযায়ী তাকে তার শাস্তি পেতে হবে।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ